অনুগল্প
পরিচয়
*****
ছেলেকে
নিয়ে রোজ স্কুলে যাওয়ার পথে অমৃতা অটো থেকেই দেখতে পায় লোকটাকে। দেখতে পায় মানে দুজনেরই চোখাচোখি হয়। সত্তর ঊর্দ্ধ, খুব মোটা একটা পাঞ্জাবী লোক। মাথায় ইয়া বড় পাগড়ি। আরো ৩ জন থাকে অবশ্য। কিন্তু শুধু এই ভদ্রলোকই রাস্তার দিকে মুখ করে বসে থাকেন, রোজ একই ভাবে। দেখেই বোঝা যায় জগিং সেরে ঘরে ফেরার আগের আড্ডা।
রোজ চোখাচোখি... বেশ মজা লাগে ব্যাপারটা। তথাগত-কে বলেছিল অমৃতা ব্যাপারটা একদিন। উত্তরে শুধু একটা “হুম”…
বেশ কয়েকমাস পরের ঘটনা। অটোওয়ালা একদিন অন্য রাস্তা দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে গেল, কোন অ্যাকসিডেন্ট না কি হয়েছিল, তাই…
কিন্তু
তারপর থেকেই অমৃতা লক্ষ্য করতে লাগল, সেই জগার্সদের আড্ডায় সবাই আছে শুধু ঐ পাঞ্জাবী লোকটি বাদে। ৪ দিন চলে যাওয়ার পর, বেশ অস্বস্তি লাগতে লাগল অমৃতার। তাহলে কি সেদিন ঐ অ্যাক্সিডেন্ট… রাতে তথাগতকে বললো ব্যাপারটা। উত্তরে ফের… “হুম”…
অমৃতা রোজ তবু ঐ গ্রুপটাকে পাস করার সময়ে আড়চোখে একবার দেখে নেয়…
আজ ২১ দিন হতে চলেছে… কিন্তু
একি! অমৃতা দূর থেকেই দেখতে পাচ্ছে, ওই তো নীল পাগড়ি…
অটোওয়ালা
কে বললো একটু আস্তে চালাতে… আজ প্রথম বার লোকটাকে দেখে হাসলো অমৃতা। লোকটিও। তিনিও যেন অপেক্ষা করছিলেন অমৃতাদের…
অটো চলতে থাকলো, অমৃতা হাসি সারা অনুভূতি জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে লাগল। তথাগতের নাম্বারটা ডায়াল করেও কেটে দিল অমৃতা…
- অনিন্দিতা দত্ত সিন্হা